কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব – Economic Importance of Agriculture

কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব ( Economic Importance of Agriculture ) : পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে , যেখানে বিশেষ কোনো শিল্প নেই । কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই , যেখানে ভূমি কর্ষিত হয় না , অর্থাৎ , কৃষিকাজ হয় না । প্রাথমিকভাবে কৃষিকাজ যে – কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির বুনিয়াদ । একারণে , কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম ।

কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব ( Economic Importance of Agriculture ) : পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে , যেখানে বিশেষ কোনো শিল্প নেই । কিন্তু পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই , যেখানে ভূমি কর্ষিত হয় না , অর্থাৎ , কৃষিকাজ হয় না । প্রাথমিকভাবে কৃষিকাজ যে – কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির বুনিয়াদ । একারণে , কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম ।

পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির মূল উৎস হল কৃষিকাজ। এই রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভর করেই জীবনধরণ করেন।

আজকে আমরা জানবো কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে।

কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব

বর্তমানে সভ্যতায় কৃষিকাজ এ এসেছে আধুনিকতা তাই এখন কৃষির মাধ্যমে উৎপাদিত দ্রবের পরিমান বৃদ্ধি করা সম্ভব ও কায়িক শ্রমের পরিমান কমানো সম্ভব হয়েছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য খ্যাদের চাহিদাও বেড়েছে দ্বিগুন, তাই যে কোন দেশে কৃষির গুরুত্ব সর্বপ্রথম যার ফলে বর্তমানে কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম।

চলুন জানা যাক কোন কোন দিকে কৃষির অর্থনৈতিক গুরুত্বগুলি –

মানুষের অপরিহার্য দ্রব্যের জোগান :

মানুষের জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য হল – খাদ্য ও পানীয় , বস্ত্র এবং আশ্রয় । কৃষিক্ষেত্র থেকে মানুষ জীবনধারণের মূল উপকরণ— কার্বোহাইড্রেট , স্নেহ ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য পায় । বিভিন্ন খাদ্যশস্য , যেমন— ধান , গম , জোয়ার , মিলেট এবং শাকসবজি , ফলমূল , মাছ – মাংস , দুধ , ডিম ইত্যাদি প্রোটিন খাদ্য কিংবা চা কফি ইত্যাদি পানীয় কৃষিক্ষেত্র জোগান দেয় । জনসংখ্যার উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে এইসব খাদ্যের চাহিদা বেড়েছে । আধুনিক কৃষি পদ্ধতির সাহায্যে এইসব খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদনের সঙ্গে জোগানও বৃদ্ধি পেয়েছে । পরিধেয় বস্তু ও বাড়িঘর নির্মাণের উপকরণ ( তুলা , পাট , বাঁশ , কাঠ , খড় ইত্যাদি ) কৃষিক্ষেত্র থেকেই পাওয়া যায় ।

পশুখাদ্যের জোগান :

মিশ্র বৃষি – ব্যবস্থায় জ্ঞাত পদ্ধতিতে পশুপালন করা হয় । পশুখাদ্যের উৎপাদন ও জোগানের ওপর উন্নত পশুপালন নির্ভর করে । উন্নত দেশগুলি পশুখাদ্যের জন্য জমিতে যব , ভুট্টা , জোয়ার , বাজরা , আলফা আলফা , ক্লোভার , হে প্রভৃতি শস্য চাষ করে । . উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলিতে জনসংখ্যার চাপ বেশি থাকায় কৃষিজমিতে প্রধানত খদ্যশস্য ও অর্থকরী শস্যের চাষ হয় ।

কৃষিকাজ – শিল্পের কাঁচামালের উৎস :

কার্পাস – বয়ন শিল্প , পাট শিল্প , চা শিল্প , কফি শিল্প , ভোজ্য তেল উৎপাদন শিল্প , খাদ্য – প্রক্রিয়াকরণ শিল্প প্রভৃতি কৃষিনির্ভর । ফলে , কৃষিনির্ভর শিল্পগুলির উন্নতির ক্ষেত্রে কৃষিকাজের গুরুত্ব অপরিসীম ।

সহযোগী শিল্পের উন্নতিতে কৃষির ভূমিকা :

 কৃষিকে ঘিরে অন্যান্য বহু শিল্পের বিকাশ ঘটেছে । যেমন- রাসায়নিক সার শিল্প , কীটনাশক ও আগাছানাশক দ্রব্য উৎপাদন শিল্প , ট্রাক্টর , হারভেস্টর , পাম্প সেট ইত্যাদি যন্ত্রশিল্পের বিকাশ ঘটেছে । ফলে , কৃষির উন্নতির সঙ্গে শিল্পের প্রসারও ঘটেছে ।

কর্মসংস্থানের উৎস: 

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বহু মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল । উন্নত দেশ অপেক্ষা উন্নয়নশীল দেশগুলির ( ভারত , বাংলাদেশ পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি ) অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের যারা জীবিকা নির্বাহ করে । বর্তমানে ভারতে প্রায় 66 শতাংশ মানুষ কৃষিতে নিযুক্ত আছে ।

জাতীয় আয়ের উৎস:

অধিকাংশ দেশের মোট জাতীয় আয়ের একটি বিরাট অংশ কৃষিক্ষেত্র থেকে আসে । বর্তমানে ভারতের মোট জাতীয় আয়ের 30-35 শতাংশ কৃষি ও কৃষি – সংশ্লিষ্ট উৎপাদন থেকে আসে ।

বাণিজ্যের প্রসার ও বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন:

উন্নত কৃষিজাত প্রবা বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে । এর থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হয় , যা দেশের অর্থনৈতিক ভিতকে সুদৃঢ় করে । অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটলে মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয় । 2009-10 সালে ভারত 37,366 কোটি টাকার কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে।

গবেষণামূলক কাজের সুযোগ বৃদ্ধি:

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষি – উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে । এজন্য উন্নত প্রথায় চাষ – আবাদের জন্য কৃষি গবেষণার কাজে বহু মানুষ নিযুক্ত আছে । গবেষণা থেকে উচ্চফলনশীল বীজ , সংকর পদ্ধতি ইত্যাদি আবিস্তৃত হয়েছে ।

তাহলে, বুজতেই পারছেন কৃষি বর্তমান সভ্যতার কতটা জরুরি।

বিভিন্ন কৃষিপ্রকল্প বা যোজনা :

কৃষির এই গুরুত্ব দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে। পশ্চিমবঙ্গের সরকার এবং ভারত সরকার কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতা জন্য একের পর এক প্রকল্প আনছেন। যার ফলে কৃষকদের মিলছে আর্থিক সাহার্য্য।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের কৃষকদের জন্য “কৃষক বন্ধু (Kisok Bondhu) প্রকল্প” বা Krishak Bandhu Scheme এনেছেন।

ভারত সরকার গোটা ভারতবর্ষের কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতার জন্য “পিম কিষান যোজনা (PM Kisan Yojana” এনেছেন।

যার ফলে, কৃষকরা কৃষিকাজের জন্য বিভিন্ন সরকারি অনুদান ও আর্থিক সাহার্য্য পেয়ে থাকেন।

Leave a Comment