গম চাষ পদ্ধতি ২০২২ – Wheat Cultivation in Bengali

গম চাষ পদ্ধতি , গম চাষের উপযুক্ত জমি, গম চাষের শ্রেণীবিভাগ । শীতকালীন গমচাষ এবং বাসন্তী কালীন গম চাষ । Wheat Cultivation in Bengali ।

গম চাষ ও পদ্ধতি – Wheat Cultivation in Bangla 

গমের বিজ্ঞানসম্মত নাম ট্রিটিকাম ইস্টিভাম ( triticum aestivam ) । বিভিন্ন প্রজাতির গমের মধ্যে ট্রিটিকাম ডাইকক্কাম , ট্রিটিকাম স্ফিরোক্কাম , ট্রিটিকাম ডিউরাম প্রধান । এটি বিশেষত : উপক্রান্তীয় ও নাতিশীতোয় অঞ্চলের ব্যাপক বাণিজ্যিক কৃষির প্রধান ফসল । উত্তর গোলার্ধে 15 ° -65 ° আর দক্ষিণ গোলার্ধে 15 ° -45 ° অক্ষাংশ পর্যন্ত অঞ্চলের মধ্যে গম চাষের প্রাধান্য দেখা যায় ।

ব্যবহার : গম পৃথিবীর প্রধান খাদ্যশস্য । গম থেকে আটা , ময়দা , সুজি তৈরি হয় এবং তা দিয়ে কেক , পাউরুটি , বিস্কুট ছাড়াও শ্বেতসার , আঠা ইত্যাদিও তৈরি করা হয় । গম গাছের খড় কাগজ শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও ব্যবহৃত হয় ।

গমের শ্রেণিবিভাগ ( Classification of Wheat ):

বীজবপন ও ফসল সংগ্রহের সময় অনুসারে এবং আকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গমের শ্রেণিবিভাগ করা যায় বীজবপন ও ফসল সংগ্রহের সময় অনুসারে গমের শ্রেণিবিভাগ – 1 ) শীতকালীন গম 2 ) বাসন্তিক গম

১) শীতকালীন গম ( Winter Wheat ) : শীতকালীন গমের বীজ শীতের শুরুতে বোনা হয় । উত্তর গোলার্ধে সাধারণত নভেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এপ্রিল বা মে মাসে শীতকালীন গমের বীজ রোপণের কাজ শেষ করা হয় । গ্রীষ্মের উয়তায় গম পেকে যাওয়ার পর ফসল কাটা হয় । পৃথিবীর মধ্য অক্ষাংশের উয় নাতিশীতোয় এবং উপরাষ্ট্রীয় বলয়ের শীতকালীন আবহাওয়া গম চাষের পক্ষে উপযুক্ত । পৃথিবীর প্রায় 80 % গম শীতকালীন ‘ শ্রেণির ।

শীতকালীন গম চাষের বণ্টন :

a ) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পেডালফার ( Pedalfers ) মৃত্তিকা অঞ্চল ও উর্বর তৃণভূমি বলয়ের অন্তর্গত কনেসাস , মিসৌরি , নেব্রাস্কা প্রদেশে শীতকালীন গম চাষ করা হয় ।

b ) চিনের হোয়াংহো ব – দ্বীপ এবং উত্তর ও উত্তর – পশ্চিম ভাগে শীতকালীন গম চাষের প্রচলন আছে ।

c ) জাপানে 37 ° উত্তর অক্ষাংশের দক্ষিণে প্রধানত পূর্ব উপকূল বরাবর শীতকালীন গম চাষ করা হয়ে থাকে ।

d ) ভারতে রবিশসা হিসেবে গম চাষ করা হয় । উত্তরপ্রদেশ , মধ্যপ্রদেশ , পাঞ্জাব , হরিয়ানা , রাজস্থান ইত্যাদি প্রদেশে গম প্রধানত শীতকালে উৎপন্ন হয় ।

e) এছাড়া আর্জেন্টিনা, নিউজিল্যান্ড , অস্ট্রেলিয়া , পাকিস্তান ও বাংলাদেশে শীতকালীন ফসল হিসেবে গমের চাষ হয় ।

২) বাসন্তিক গম ( Spring wheat ) : বাসস্তিক গমের বীজ বসন্তের শুরুতেই বোনা হয় । এই সময় দীর্ঘ শীতের শেষে বরফগলা জলে মাটি ভিজে থাকে । ফলে অলসেচের প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশে হ্রাস পায় । কার্যত পৃথিবীর যে – সমস্ত অঞ্চলে শীতকালে তুষারপাত হয় এবং মাটি চাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে , সেখানে কৃষির অন্যান্য উপাদান মজুত থাকলে বাসস্তিক গম শীতের শেষে চাষ করা যায় ।

বাসন্তিক গমচাষের বণ্টন :

( a ) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র উত্তর ও দক্ষিণ ডাকোটা , মনটানা , ওয়াইওমিং প্রভৃতি অঞ্চলে বাসম্ভিক গম চাষ করা হয় । বিশেষত , লোহিত নদীর ( Red river ) উপত্যকা বসন্তকালীন গমচাষের জন্য বিশেষ উপযুক্ত ।

 b ) কানাডার দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তীর্ণ প্রেইরি ( Prairie ) ক্ষেত্রে অর্থাৎ মানিটোবা , সাসকাচুয়ান ও আলবার্টা প্রদেশের সমতলভূমিতে বাসন্ধিক গমের চাষ হয় ।

c ) পূর্বর্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের স্লেপ তুলভূমি অঞ্চলে এবং সাইবেরিয়ার একটি বড়ো অঞ্চলে গম বসন্তকালীন ফসল । আকৃতিগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গমের শ্রেণিবিভাগ : আলোচ্য প্রসঙ্গ অনুসারে , গম প্রধানত তিন প্রকার ।

যেমন- 1 ) সাদা গম , 2 ) ডুরাম গম ও 3 ) শক্ত লাল গম

সাদা গম ” ( White wheat ) : সাদা গম নরম জাতের হয় । শীত ও বসন্ত দুই ঋতুতেই এ জাতের গম চাষ করা যায় । এর দানাগুলি বড়ো ।

ডুরাম গম ( Durum wheat ) : ডুরাম গম কঠিন ফ্রাতের বসন্তকালীন গম । ভারতে বিশেষত দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলে ডুরাম গমের চাষ হয় । ডুরাম গমের ফানাগুলি মাঝারি থেকে বড়ো মাপের ।

শক্ত লাল গম ( Hard red wheat ) : শীত ও বসন্ত দুই ঋতুতেই শক্ত লাল গম চাষ করা যায় । এ – জাতীয় মের দানাগুলি ছোটো থেকে মাঝারি মাপের ।

ভৌগোলিক পরিবেশ: গম উৎপাদনের পক্ষে সাধারণত নিম্নলিখিত প্রাকৃতিক অবস্থাগুলি অনুকূল –

1 ) উন্নতা: শুদ্ধ নাতিশীতোয় বা শীতপ্রধান আবহাওয়া গম চাষের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে । গম গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য 15-20 ° উন্নতার প্রয়োজন । বীজ বপনের পর অন্তত ছ’সপ্তাহ আবহাওয়া শীতল থাকা একান্ত প্রয়োজন । এই সময়ে 15 22 ° সে . গড় উন্নতা চাষের অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করে ।

 2 ) বৃষ্টিপাত্ত: গম অপেক্ষাকৃত শুষ্ক অঞ্চলের ফল । সেজন্য গম চাষে জ্বলের প্রয়োজন সীমিত । গড়ে বাৎসরিক 50-100 সেমি বৃষ্টিপাত ও 110 টি তুহিনমুক্ত দিন গম চাষের অনুকূ ফুল ধরার সময় ও চতুর্থ শেষ দানা নবম থাকাকালীন প্রয়োগ করতে হয় ।

3 ) জলসেচ: সেচসেবিত এলাকায় গমের ভালো ফলনের জন্য প্রথম সেচ – বীজ বপনের তিন সপ্তাহ পরে , দ্বিতীয় সেচ বপনের ছ’সপ্তাহ পরে , তৃতীয় সেচ অম্লধর্মী দেশ , বেলে – দোআঁশ , পলি দোআঁশ মাটি গম চাষের উপযোগী । গাঢ়বাদামি মাটি , পাড়জল মাটি ,

4 ) মাটি : ‘ কুরমৃত্তিকা ‘ বা চারনোজেম ‘ মটি গম চাষের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট ।

5) ভূমি: ভালো জল নিকাশির বন্দোবস্তযুক্ত প্রায়সমতল ভূমি বা অল্প ঢালু জমিতে গম চাষ করা হয়। পাহাড়ের খাড়া ঢালে, ধাপে কেটে গম চাষ করা হয়।

6) পরিবহন : পরিবহন ব্যবস্থার সুযোগ সুবিধা যুক্ত অঞ্চলে গম বাজারজাত করা সহজ।

3 thoughts on “গম চাষ পদ্ধতি ২০২২ – Wheat Cultivation in Bengali”

  1. I HAVE RECEIVED EARLIER, RECENTLT I CHECKED MY STATUS IN Official WEBSITE, BUT IT SHOWS THAT STATUS Approved BUT ACCOUNT STATUS INVALID. MY NAME IN AADHAAR AND IN BANK ACCOUNT BE THE SAME.I APPEARED IN NEAREST Agriculture Office.

    Reply

Leave a Comment